ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় শপথ: নির্বাহী আদেশে আমূল পরিবর্তন আসবে
- By Jamini Roy --
- 20 January, 2025
২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি, মার্কিন মসনদে ফেরার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। স্থানীয় সময় সকালে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে অনুষ্ঠিত শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। শপথ নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আমূল পরিবর্তনের সূচনা করেছেন। এই আদেশগুলো মার্কিন অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হতে পারে। শপথ নেওয়ার পর ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার প্রশাসন “ঐতিহাসিক গতি এবং শক্তি” নিয়ে কাজ শুরু করবে।
নির্বাহী আদেশ হলো প্রেসিডেন্টের একতরফা সিদ্ধান্ত যা আইনের বলে কার্যকর হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন, যার মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অন্যতম। সেই সময় তিনি সিরিয়া, ইরান, ইরাক, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এসব সিদ্ধান্তের কারণে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন, তবে তিনি তার ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রয়োগে সামরিক বাহিনী এবং সরকারি সংস্থাগুলোর ওপরও পরিবর্তন এনেছিলেন।
নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট একাধিক সিদ্ধান্ত দ্রুত কার্যকর করতে পারেন। বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ তৎক্ষণাৎ কার্যকর হয়, যেমন ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে কিছু আদেশের প্রভাব সীমিত হতে পারে, যা কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর অনুমোদনের পর কার্যকর হতে পারে। যেমন গর্ভপাতের অধিকার সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির পর, তার প্রভাব কয়েক মাস পরেই বাস্তবায়িত হয়।
মার্কিন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে দেশের প্রধান নির্বাহী এবং সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নির্ধারিত করা হয়েছে। কংগ্রেস সাধারণত প্রেসিডেন্টকে কিছু ক্ষমতা প্রদান করে, যা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। তবে, নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নতুন আইন তৈরি করতে পারেন না, এবং তা কংগ্রেসের অনুমোদন ব্যতীত কার্যকর করা সম্ভব নয়।
নির্বাহী আদেশ চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে আদালতে। যেমন ২০১৭ সালে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বিরোধী এক আদেশ আদালত অবরুদ্ধ করে দেয়। এমনকি ২০২৩ সালে বাইডেনের একটি নির্বাহী আদেশও আদালত অবরুদ্ধ করেছিল, যা ফেডারেল কর্মীদের জন্য কোভিড-১৯ টিকা বাধ্যতামূলক করেছিল।
দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প একের পর এক নির্বাহী আদেশ জারি করতে পারেন। প্রথম দিনেই ১০০ নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। সীমান্ত সংকট, অভিবাসী প্রত্যাবাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ নীতি পরিবর্তনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এসব সিদ্ধান্ত মার্কিন জনগণের জন্য এক নতুন রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত সৃষ্টি করবে। ট্রাম্প তার প্রথম কার্যদিবসেই এসব পদক্ষেপ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।